দ্রুতি ও জ্যাতি। মা শ্রুতি। প্রজাতি হিসেবে পরিচয়ে তারা এলিয়েন।পূথিবী থেকে কিছুটা দূরবর্তী ওয়ল্ফ-১০৬১ নামক নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান একটি গ্রহে তাদের বসবাস। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, গ্রহাণুপুঞ্জ, উল্কা,ছায়াপথ ও মহাবিশ্বের অন্যান্য অস্তিত্বসমূহে ভীনগ্রহী হয়ে ভ্রমন ও পর্যবেক্ষণ করে ডাটাসমূহ মহাজাগতিক ফাস্ট রেডিও তরঙ্গ আকারে মহাশূন্যে ছড়িয়ে দেওয়া তাদের কাজ।একদা শ্রুতির কাছে পূথিবী নামক গ্রহটির কাছাকাছি এইচআর-৬৮১৯ নামক ব্লাকহোলের উৎস নিয়ে সংকেত আসে।অজানা উৎসের তথ্য অনুসন্ধানের জন্য দ্রুতি,জ্যাতি, মা শ্রুতি ও তাদের সম্প্রদায়ের এক বৈঠকে সিদ্বান্ত হয় শ্রুতিকে উৎসে গিয়ে অজানা কোয়ান্টাম ডাটাগুলো রেডিও সংকেত আকারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।দিনকয়েক পর,শ্রুতি যাত্রা নিল।ইউরোপা,টাইটান, ইন্সেলাডুস একেক গ্রহ-উপগ্রহ দিয়ে শ্রুতির ভ্রমণ চলছে।পালাক্রম যাত্রায় সে ভুলে এক বিরল গ্রহে ঢুকে পড়ে।দুর্বল বায়ুমণ্ডলীয় চাপ,নিশ্বাসপ্রশ্বাসের দারুণ অসংগতি, জরাজীর্ণ পাহাড়-পর্বতের এলাকা, তরল জলের অভাব,নিচের দিকে বরফ আচ্ছাদিত,শিলাপাথরের আবরণে রুষ্ট মঙ্গল গ্রহের এক নগরীতে।এই নগরীর এলিয়েনরা খুবই ভয়ংকর জাতের।কালো কালো চোখ,বিশাল দেহাকৃতির, পরনে সুপারম্যানের মতো জাম্পসুট, বিশালাকার মাথা যেন মস্তিষ্কের বেন্ট্রিকলে পানি জমে বা জীন দুর্ঘটনায় এদের এমনি হয়েছে।গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ভ্রমণে শ্রুতির বেহাল দশা,আবার হিংস্রতার খপ্পর পরিবেশে এসে আটকে পড়া যেন তার শেষকৃত্য এখানেই হবে।শ্রুতি জর্জরিত কণ্ঠে হিংস্র এলিয়েনদের নিকট জানান দিল তার অভিযাত্রার কারণটি: ব্লাকহোল, যেখানে নাকি ফোর্থ ডাইম্যানশন সময়কে ফিজিক্যাল্লি ও ফিফ্ট ডাইম্যানশন কল্পনাকে বাস্তবরূপে দেখা যায়।আলোর বিচ্ছুরণ,প্রতিফলন কিছুই ঘটেনা ওখানে।কালো অন্ধকার, বিরল কোয়ান্টাম তথ্যের সমাহার।সে বুঝাল, ডাটাগুলো আহরণ করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ছড়াতে হবে,মহাবিশ্বকে নতুন উৎসের কথা জানাতে হবে।ওদের মানসিকতার গলন হলো এবং তার সাথে কিছু দস্যু এলিয়েন ব্লাকহোলের উদ্দেশ্যে অভিযাত্রী হলো।আর,এদিকে মা শ্রুতি এতদিনেও না ফিরায় দ্রুতি ও জ্যাতি পাগলপ্রায়।ওদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বিমুখ হয়ে এক সুন্দরী মানবীয়ী দ্রুতি ও জ্যাতিকে সাথে নিয়ে তাদের মা শ্রুতির সাথে দেখা করতে ব্লাকহোলের উদ্দেশ্য যাত্রা দিলো।আর ওইদিকে শ্রুতি তার দস্যু অভিযাত্রীদের নিয়ে প্রচণ্ড কালো অন্ধকার গর্তের মধ্যে দিয়ে ঢুকে ভাসমানের মতো নিচ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে পড়তে থাকে।ব্লাকহোলের হালকা গ্যাসীয় মেডিয়েভাল স্তরে পৌছে ভীষণ ভীষণ উদ্ভট দৃশ্যের সম্মুখীন হয়।নতুন মিথস্ক্রিয়ায় শ্রুতি যেন নিজেকে হারিয়ে দিল।সে নিথর দেহে কাতর শোকে দ্রুতি জ্যাতিকে নিয়ে ভাবতে থাকে।কালো অন্ধকারের এই সময়টি অতি দীর্ঘ। কেননা,ব্লাকহোলের একেকটা সময় অন্য গ্রহের শতগুনের সমান,প্রচণ্ড গ্রাভিটির ফলে এমন হয়।হঠাৎ শ্রুতি তার চোখের সামনে দেখতে পেলো এক মানবীয়ি সুন্দরীর সাথে দ্রুতি ও জ্যাতিকে। যেন প্রাণহীন মূহুর্তেও এক স্বস্তির প্রশান্তি।দস্যু এলিয়েনগুলো সুন্দরী মানবীয়িকে কে ঘাপটে ধরে জীবন্ত আলোকোজ্জ্বল দেহটিকে চেটেপুটে খেতে থাকে যেন পুনরায় তাদের হিংস্রতা জেগে উঠেছে।নীরব নিস্তব্ধ কিছু দৃশ্য চলে যায়।দ্রুতি, জ্যাতি ও মা শ্রুতির মধ্যে আবেগের রোমান্টিক মূহুর্ত কাটতে থাকে।হঠাৎ মা শ্রুতির কি যেন ইশারা পেয়ে দ্রুতি ও জ্যাতি নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে অতি তাড়াতাড়ি চারিদিকের কোয়ান্টাম ডাটাসমূহ রেডিও ফাস্ট ব্রাস্টে ট্রান্সক্রিপ্ট করে মহাশূন্যের দিকে ছড়িয়ে দেয় এবং গ্রাভিটেশনাল স্লিংশট করে ব্লাকহোল থেকে মহাশূন্যের অজানা এক দিকে উড়াল দেয় !!!!!
≠এলিয়েন≠
লেখক: আশিকুর রহমান
প্রেসিডেন্ট,
বশেমুরবিপ্রবি বিজ্ঞান ক্লাব।
এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি।
Post a Comment
Post a Comment